স্তরের নাম | সেবার ধরণ, বিবরণ ও ভূমি মালিকের করণীয় | সেবা প্রদানে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারী |
বিজ্ঞপ্তি প্রচার | জরিপ শুরু করার পূর্বে সেটেলমেন্ট অফিসার স্থানীয় প্রশাসনসহ ভূমি মালিকগণকে অবহিত করে জরিপ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেন। এ কাজে মাইকিং ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপনসহ ব্যাপক জনসংযোগ করা হয়। জরিপ বিজ্ঞপ্তি ঘোষনার পর পরই ভূমি মালিকগণকে জরিপের প্রস্ত্ততিমূলক কাজ হিসেবে নিজ নিজ জমির আইল/সীমানা সঠিক ভাবে চিহ্নিত করে রাখতে হবে। | সেটেলমেন্ট অফিসার/সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার |
ট্রাভার্স | কোন মৌজার নকশা সম্পূর্ণ নতুন করে প্রস্ত্তত করতে সরেজমিনের সাথে সংগতি রেখে একটি নির্দিষ্ট স্কেলে প্রাথমিক ভাবে নকশা প্রস্ত্ততের যে কাঠামো স্থাপন করা হয় সেটাই ট্রাভার্স। ট্রাভার্সের উপর ভিত্তি করে পি-৭০ সীটের মাধ্যমে মৌজার নকশা প্রস্ত্তত করা হয়। কোন মৌজার পুরানো নকশা অর্থাৎ ব্লুপ্রিন্ট সীটের উপর জরিপ করার ক্ষেত্রে ট্রাভার্স করা হয় না। এ স্তরে জরিপ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সাথে ভূমি মালিকগণকে যোগাযোগের তেমন প্রয়োজন নাই। তবে ভূমি মালিকগণ জমির আইল/সীমানা চিহ্নিত করে রাখবেন। | ট্রাভাসৃ ক্যাম্প কর্মকর্তা/ ট্রাভাসৃ সার্ভেয়ার। |
কিস্তোয়ার | এই স্তরে আমিনদল ভূমি মালকগণ কর্তৃক চিহ্নিত আইল/সীমানা অনুযায়ী প্রতি খন্ড জমি পরিমাপ করে মৌজার নকশা অংকন কিস্তোয়ার অথবা ব্লু-প্রিন্টে পুরোনো নকশা সংশোধন করেন। অনেকের ধারণা যে জরিপ কর্মচারীগণ জমির সীমানা ঠিক করে দেন। এ ধারণাটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে জরিপ কর্মচারীগণ বিদ্যমান সীমানা অনুযায়ী নকশা প্রস্ত্তত করেন। | সরদার আমিন/হুল্কা অফিসার ও কানুনগো /ক্যাডাস্ট্রল সার্কেল অফিসার। |
খানাপুরি | কিস্তোয়ার স্তরে অংকিত নকশার প্রত্যেকটি দাগে সরেজমিন উপস্থিত হয়ে আমিনদল জমির দাগ নম্বর দিবেন এবং মালিকের রেকর্ড, দলিলপত্র ও দখল যাচাই করে প্রাথমিকভাবে মালিকের নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য খতিয়ানে লিপিবদ্ধ (খানাপুরি) করেন। এ স্তরে মালিকদের প্রধান কাজ হচ্ছে যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে আমিনকে জমির মালিকানা ও দখল সংক্রান্ত প্রমাণাদি উপস্থাপন করে খতিয়ানে ঐসব তথ্য লিপিবদ্ধ করানো। | সরদার আমিন/হুক্কা অফিসার বা কানুনগো/ ক্যাডাস্ট্রল সার্কেল অফিসার। |
বুঝারত | বুঝারত অর্থ জমি বুঝিয়া নেওয়া। এ স্তরে নতুন আমিনদল কর্তৃক খতিয়ান বা পর্চায় জমির পরিমাণ উল্লেখ করে বিনামুল্যে উক্ত পর্চা জমির মালিককে সরবরাহ (বুঝারত) করা হয়, যা ‘‘মাঠ পর্চা’’ নামে পরিচিত। পর্চা বিতরণের তারিখটি পূর্বেই নোটিশ/পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার / এলাকায় মাইকিং -এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। পর্চা বিতরণের নির্ধারিত তারিখে ভূমি মলিকগণ নিজে উপস্থিত থেকে জরিপ কর্মচারীগণের নিকট থেকে পর্চা সংগ্রহ করেন। ভুমি মালিকগণ পর্চার সঠিকতা যাঁচায় করে দেখবেন এবং প্রাপ্ত পর্চার ভূল-ভ্রান্তি সংশোধন বা পরিবর্তন আবশ্যক হলে নির্দিষ্ট বিবাদ (Dispute) ফরম পূরণ করে তা আমিনের নিকট জমা দিবেন। হল্কা অফিসার সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের শুনানির মাধ্যমে দ্রুত ঐ সকল বিবাদ নিস্পত্তি করবেন। খানাপুরী স্তরে কোন কারণে মালিকের নাম, ঠিকান ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হয়নি এমন ভূমি মালিকগণ বুঝারত স্তরে হল্কা অফিসারের নিকট আবেদন ক্রমে ঐ সকল তথ্য রেকর্ড করার সুয়োগ পাবেন । ভূমি মালিকগণকে মনে রাখতে হবে মাঠ পর্যায়ে সরেজমিন রেকর্ড করার এটাই শেষ সুযোগ। এর পরেও রেকর্ড সংশোধন /প্রনয়ণের সুযোগ থাকলেও তা হবে অপেক্ষাকৃত দুরবর্তী কোন ক্যাম্প অফিসে বা জটিল ও যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ। | সরদার আমিন/হুক্কা অফিসারের বা কানুনগো/ ক্যাডাস্ট্রোল সার্কেল অফিসার। |
খানাপুরি কাম বুঝারত | যখন কোন মৌজার ব্লু-প্রিন্ট সীটের জরিপ কাজ করা হয় তখন খানাপুরি ও বুঝারত স্তরের কাজ একসাথে করা হয় |
|
তসদিক বা এ্যাটেষ্টেশন | ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে তসদিক স্তরের কাজ সম্পাদিত হয় ক্যাম্প অফিসে। খানাপুরী ও বুঝারত স্তরে খতিয়ান প্রণীত হয় মৌসুমী কর্মচারী বা আমিন দ্বারা। তসদিক স্তরের কাজ সম্পাদন করেন একজন কানুনগো বা রাজস্ব অফিসার। বুঝারত স্তরের মালিকানা সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র ও প্রমাণাদি যাঁচাই করে প্রতিটি খতিয়ান সত্যায়ন করেন তসদিক অফিসার। এ স্তরে ভূমি মালিকগণ পূর্ববর্তী স্তরে প্রণীত পর্চা ও নকশায় কোন সংশোধন প্রয়োজন মনে করলে বিবাদ (Disput) দাখিল করতে পারেন এবং উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করে তা সংশোধণের সুযোগ নিতে পারেন। তসদিককৃত পর্চা জমির মালিকানার প্রাথমিক আইনগত ভিত্তি (Legel Document) হিসেবে বিবেচিত হয। তাই এ স্তরের কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। | তসদিক অফিসার / উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসা। |
খসড়া প্রকাশনা (ডিপি) ও আপত্তি দায়ের | তসদিক সমাপ্তির পর কোন এলাকার জমির প্রণীত রেকর্ড (খষড়া প্রকাশনা (ডিপি) সর্বসাধারণের প্রদর্শনের জন্য মৌজাভিত্তিক ২১ দিন উন্মুক্ত রাখা হয়। খষড়া প্রকাশনা উন্মুক্ত রাখার সময়কাল উল্লেখপূর্বক ক্যাম্প অফিস হতে এ জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। ভূমি মালিকগণের আদ্যোক্ষর অনুযায়ী খতিয়ান বা পর্চা ক্রমবিন্যাস করা হয়। বিদায় তসদিককৃত খতিয়ানটির নম্বর পরবর্তীতে বদলে যায়। তাই তসদিককৃত খতিয়ানের নতুন নম্বর অর্থাৎ ডিপি নম্বরটি সংগ্রহের জন্যও ভূমি মালিকগণকে নিজ নিজ পর্চাসহ খষড়া প্রকাশনা (ডিপি) ক্যাম্পে উপস্থিত হতে হয়। ডিপিতে প্রকাশিত খতিয়ান সম্পর্কে কারো কোন আপত্তি বা দাবী থাকলে সরকার নির্ধারিত ১০.০০ টাকার কোর্ট ফি দিয়ে আপত্তি দায়ের করা যাবে। এইটি ৩০ বিধির আপত্তি। | তসদিক অফিসর/ খষড়া প্রকাশনা অফিসার। (উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার)। |
আপত্তি শুনানী | ডিপি চলাকালে গৃহীত আপত্তি মামলাসমূহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে নোটিশ ইস্যু মারফত জ্ঞাত করে নির্দিষ্ট তারিখ, সময় ও স্থানে শুনানি গ্রহণ করে নিষ্পত্তি করা হয। দেওয়ানী কার্য্যবিধি অনুসরণে এটি বিচারিক কার্যক্রম। পক্ষপণ নিজে অথবা প্রয়োজণে মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজ নিজ দাবি ‘‘আপত্তি অফিসার’’ এর নিকট উপস্থাপন করতে পারেন। আপত্তি অফিসার পক্ষগণের বিস্তারিত শুনানি দিযে, কেস নথিতে লিপিবদ্ধ ও পর্যালোচনা করে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন এবং আইনানুযায়ী প্রস্ত্ততকৃত রেকর্ডে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনবেন। সন্তোষজনক কারণ উল্লেখ না করে কোন একটি পক্ষের অনুপস্থিতিতে আপত্তি মামলা নিষ্পত্তি করার কোন বিধান নেই। | সংশ্লিষ্ট আপত্তি অফিসার /সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার, উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস। |
আপীল শুনানী | আপত্তির রায়ে সংক্ষুব্ধ কোন পক্ষ ৩১ বিধিতে আপীল দায়ের করলে এ পর্যায়ে ঐ সকল আপীলের শুনানিও নিষ্পত্তি করা হয়। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আপত্তি মামলার রায়ের নকল সেটেলমেন্ট অফিসার বরাবর আবেদন দাখিলের মাধ্যমে সর্বাগ্রে উত্তোলন করতে হবে। এ জন্য সরকার নির্ধারিত নিম্নরুপ হারে কোর্ট ফি এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক কার্টিজ পেপার জমা দিতে হবে। | সহাকারী সেটেলমেন্ট অফিসার/ চার্জ অফিসার/ জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার |
আপীল শুনানী
|
আপত্তির রায় প্রদানের তারিখ থেকে (আপত্তির নকল সরবরাহর সময় বাদ দিয়ে) ৩০ দিনের মধ্যে আপীল দায়ের না করলে আবেদনটি তামাদির কারণে অগ্রহণযোগ্য হবে। আপীল একটি বিচারিক কার্যক্রম এবং আপীলে ঘোষিত রায়ই চূড়ান্ত। আপীল স্তরের পরে প্রণীত রেকর্ড বিষয়ে কেবল মাত্র তঞ্চকতা ও করণিক ভূলের অভিযোগে সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট প্রতিকার চাওয়া হয়। | সহাকারী সেটেলমেন্ট অফিসার/ চার্জ অফিসার/ জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার | ||||||
চূড়ান্ত প্রকাশনা | উপরোক্ত স্তর সমূহের কাজ সমাপ্তির পর আনুসঙ্গিক কার্যাদি সম্পন্ন করে পর্চা ও নকশা মুদ্রণ করা হয়। মুদ্রিত নকশা ও পর্চা পুণ:পরীক্ষা করে তা চূড়ান্ত প্রকাশনায় দেয়া হয়। চূড়ান্ত প্রকাশনার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলায় একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। চূড়ান্ত প্রকাশনার সমযকাল ৩০ কার্যদিবস। এ স্তরে ভূমি মালিকগণ মুদ্রিত নকশা ও পর্চা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় করতে পারেন। প্রতিটি পর্চা ৬০/- টাকা এবং প্রতিটি নকশা ৩৫০/- টাকা। কোন মৌজার চূড়ান্ত প্রকাশনা কোন কার্যালয়ে কবে থেকে আরম্ভ হবে সে সম্পর্কে নোটিশ /পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। | উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস | ||||||
ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুন্যাল ও আপীলেট ট্রাইবুনাল | মৌজা রেকর্ড চূড়ান্ত প্রকাশনা সংক্রান্ত গ্রেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১ বছরের মধ্যে চূড়ান্ত প্রকাশিত রেকর্ডের বিষয়ে কোন আপত্তি থাকলে সে সম্পর্কে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুন্যাল /দেওয়ানী আদালতে প্রতিকার প্রার্থণা করা যাবে। ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুন্যালে কেহ প্রতিকার না পেলে তিনি হাইকোর্টে ল্যান্ড সার্ভে আপীলেট ট্রাইবুন্যালেও আপীন করতে পারেন। |
| ||||||
মৌজা সীমানা নিয়ে বিরোধ | জরিপ চালাকালীন কোন মৌজা/উপজেলা সীমানা সম্পর্কীয় বিষয়ে কোন বিরোধ দেখা দিলে সেটেলমেন্ট অফিসার খানাপুরি কাম বুঝারত স্তরে উক্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করবেন। আন্ত: জেলা সীমানা বিরোধ মহাপরিচালক, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকগণের সমন্বয়ে নিষ্পত্তি করবেন। |